
সন্তানের সাথে আপনার সম্পর্ক কেমন?
আমাদের মধ্যে অনেক মা-বাবাই হয়তো একই ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন। আমরা সন্তানদের ভালো স্কুল, প্রাইভেট টিউটর, দামি খেলনা—সবকিছুই দিই, কিন্তু তারপরও মনে হয় যেন সন্তান দূরে সরে যাচ্ছে।
এক বাবা যেমন বলছিলেন, "স্কুল থেকে ফিরেই ও নিজের ঘরে ঢুকে যায়। আগে আমাকে সবকিছু বলতো, এখন আর কিছুই বলে না।"
আমরা অনেকেই হয়তো এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এর কারণ কি হতে পারে?
আমি শুধু একটা প্রশ্ন করেছিলাম, "আপনার সন্তানের সাথে শেষ কবে ১০ মিনিট শুধু ওর কথা শুনেছেন, কোনো পড়াশোনা বা শাসন ছাড়া?"
তিনি কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে উত্তর দিলেন, "সত্যি বলতে… মনে নেই।"
এই জায়গাটাতেই হয়তো সবচেয়ে বড় ফারাকটা তৈরি হয়। আমরা সন্তানদের সব দিই—কিন্তু সময় এবং মনোযোগ কতটা দিই?
মনোবিজ্ঞানে একটি কথা আছে: "শিশু ভুল করবে, কিন্তু সে যেন জানে—তার পাশে আপনি আছেন।"
আমাদের আচরণ ধীরে ধীরে আমাদের প্যারেন্টিং স্টাইল তৈরি করে। মনোবিজ্ঞানী ডায়ানা বাউমরিন্ড এই স্টাইলগুলোকে ৪ ভাগে ভাগ করেছেন:
১. Authoritative – যত্নবান অথচ দৃঢ়
এখানে বাবা-মা স্নেহ ও কঠোরতার সঠিক সমন্বয় ঘটিয়ে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। তারা নিয়মকানুন মানেন এবং সন্তানের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন। ফলাফল: এই স্টাইলে বেড়ে ওঠা শিশুরা আত্মবিশ্বাসী, দায়িত্বশীল এবং স্বাধীন হয়।
২. Authoritarian – শাসনপ্রিয়, কথা না শোনা
এক্ষেত্রে নিয়মকানুন কঠোরভাবে চাপিয়ে দেওয়া হয়, কিন্তু সন্তানের অনুভূতি বা মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। ফলাফল: শিশুরা ভয়ভীতিতে থাকে, কিংবা হঠাৎ বিদ্রোহী হয়ে ওঠে।
৩. Permissive – যা খুশি করার অনুমতি
এখানে বাবা-মা খুব বেশি ছাড় দেন এবং নিয়ম বা সীমা খুব কম থাকে। ফলাফল: সন্তানরা সহজেই নিয়ন্ত্রণ হারায়, দায়িত্ব নেওয়ায় দুর্বল হয় এবং মাঝে মাঝে হতাশাগ্রস্ত হয়।
৪. Neglectful – না যত্ন, না শাসন
সবশেষে রয়েছে Neglectful স্টাইল, যেখানে বাবা-মা সন্তানের প্রতি যত্ন বা মনোযোগ কম দেন। ফলাফল: শিশুরা মানসিক ও আবেগীয় দিক থেকে অসহায় বোধ করতে পারে এবং নিজের মূল্যায়নে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
আপনি নিজে কোন প্যারেন্টিং স্টাইলে পড়েন বলে মনে করেন?
আর আপনার সন্তান কি কখনো এমন কিছু বলেছে, যা আপনাকে থামিয়ে ভাবতে বাধ্য করেছে?
#ParentingBangla #শিশুর_মন #ParentingStyles #PositiveParenting #ParentingJourney #BanglaParents